আমাদের শরীরের জন্য কৃমি অনেক খারাপ একটি পরজীবী। কৃমি থেকে বাচতে হলে কৃমির ঔষধ খেতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক কিংবা বাচ্চাদের কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো তা নিয়েই আজকের এই ব্লগ।
আপনার পেটে বা আপনার বাচ্চার পেটে যদি কৃমি হয়ে থাকে, তবে এ থেকে দ্রুত এবং সঠিক উপায়ে মুক্তি পাওয়ার পথ হচ্ছে কৃমির ওষুধ খাওয়া। তবে, কৃমির ওষুধ কোনটা ভালো তা আমরা অনেকেই জানি না। তো চলুন, ১০টি সেরা কৃমির ঔষধের নামজ জেনে নেয়া যাক।
Table of Contents
কৃমি কেন হয়
বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হচ্ছে কৃমি। দূষিত খাবার, পানি, মলমূত্র এবং মাটি থেকে কৃমি ছড়ায়। কৃমিতে আক্রান্ত ব্যক্তির মলমূত্রের মাধ্যমে মাটিতে কৃমির ডিম ছড়িয়ে পড়ে। এই ডিম মাটিতে শুকিয়ে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষের পায়ের মাধ্যমে, খাবার ও পানির মাধ্যমে বা হাতের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে।
কৃমিতে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ হল:
- অস্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন
- দূষিত পানি
- অপরিচ্ছন্ন গৃহস্থালি
- বড় নখ
- শৌচাগার ব্যবহারের পর হাত না ধোয়া
- খাবার তৈরি বা খাওয়ার আগে হাত না ধোয়া
- কাঁচা ফলমূল না ধুয়ে খাওয়া
- যথেষ্ট রান্না না করা
- খালি পায়ে শৌচাগারে যাওয়া
- মাটিতে খালি পায়ে হাঁটা
উপরোক্ত কারণে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের কৃমি সমস্যা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে সাধারণত ০৩ ধরনের কৃমি দেখা যায়। এগুলো হচ্ছে – গুঁড়া কৃমি, গোলকৃমি এবং ফিতা কৃমি।
কৃমি হলে বুঝবেন কীভাবে?
পেটে কৃমি হলে সাধারণ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। এগুলো হচ্ছে পেটব্যাথা, অরুচি, বমি বমি লাগা, মলদ্বারে চুলকানি, পাতলা পায়খানা, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি। এই লক্ষণগুলো আপনার বা আপনার পরিবারের কারও মাঝে দেখা দিলে যাচাই করে তাকে কৃমির ঔষধ সেবন করাতে হবে।
কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো?
সবচেয়ে ভালো কৃমির ঔষধ হচ্ছে অ্যালবেনডাজল, মেবেনডাজল। বাংলাদেশের যেকোনো ফার্মেসি থেকেই এই কৃমির ঔষধগুল ক্রয় করতে পারবেন। এছাড়াও, আরও অনেক কৃমির ঔষধ আছে। এগুলো নিচে উল্লেখ করে দিয়েছি।
সেরা ৮টি কৃমির ঔষধের নাম
- Levamisol
- Albezen tablet
- Estazol tablet
- Praziquantel
- Almex tablet
- Albendzole
- Mebendazole
- Ben-A tablet
- Ivermectine
আপনার এলাকার ফার্মেসি থেকে বা যেকোনো ঔষধের দোকান থেকেই এসব কৃমির ঔষধ কিনতে পারবেন। কৃমির ঔষধগুলো কেনার পর পুরো পরিবারের সবাইকে খেতে হবে। এতে করে দ্রুত কৃমিনাশক ওষুধ সফলভাবে কাজ করতে পারবে।
বাচ্চাদের কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো?
বাচ্চাদের মাঝে অধিকাংশ বাচ্চার মাঝেই কৃমি সমস্যা দেখা যায়। বাচ্চাদেরকে তাই, কৃমির ঔষধ খাওয়াতে হবে। নিচে বাচ্চাদের কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো তা উল্লেখ করে দিয়েছি।
- অ্যালবেনডাজোল
- পাইরেনটাল পামোয়েট
- মেবেনডাজোল
- লিভোমিসোল
বাচ্চাদের কৃমি সমস্যা দূর করার জন্য এসব ঔষধ খাওয়াতে পারেন। ২ বছরের বেশি বাচ্চাদের জন্য ২ চামচ সিরাপ খাওয়াতে হবে। বাচ্চার বয়স ১-২ বছরের মাঝে হলে ১ চামচ সিরাপ খাওয়াতে হবে। এভাবে করে আপনার বাচ্চার শরীর থেকে কৃমি নির্মূল করতে পারবেন।
কৃমির ঔষধ কখন খেতে হয়
কৃমির ঔষধ প্রতি ৩ মাস অন্তর অন্তর পুরো পরিবারের খাওয়া উচিত। এতে করে, পুরো পরিবারের সবার কৃমির সমস্যা দূর হয়ে যাবে। নয়তো, পরিবারের যেকোনো একজন সদস্য দারা আবার সবার কাছে কৃমি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
যদি কৃমির ট্যাবলেট খান, তবে দুইটি ট্যাবলেট খেতে হবে। প্রথম ট্যাবলেট খাওয়ার ৭ দিন পর আবারও একটি ট্যাবলেট খেতে হবে। অতঃপর, ৩ মাস পর আবার ট্যাবলেট খেতে হবে। এভাবে করে পুরো পরিবারকে কৃমির ট্যাবলেট খেতে হবে।
কৃমির ঔষধ কতদিন পর পর খেতে হয় নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। বাচ্চাদের কৃমির ঔষধ খালি পেটে খাওয়াতে পারেন অথবা ভরা পেটে।
FAQ
কৃমির ঔষধ কি খালি পেটে খেতে হয়?
কৃমির ঔষধ ভরা পেটে খেতে হয়। পরিবেশ ঠান্ডা বা তাপমাত্রা কম এমন দিনে কৃমির ঔষধ খাওয়া উত্তম।
কৃমির ওষুধ কত দিন পর পর খেতে হয়?
কৃমির ওষুধ ৬ মাস পর পর খেতে হয়।
কৃমির ঔষধের নাম কি কি?
কৃমির ঔষধের নামগুলো হচ্ছে – Levamisol, Albezen tablet,Estazol, tablet, Praziquantel, Almex tablet, Albendzole, Mebendazole, Ben-A tablet, Ivermectine ।
শিশুদের জন্য mebendazole নিরাপদ?
শিশুদের জন্য mebendazole ঔষধ নিরাপদ। তবে, শিশুর বয়স ২ বছরের উপরে হতে হবে। এর কম হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে শিশুকে ওষুধ সেবন করাতে হবে।
কত বছর বয়স থেকে কৃমির ঔষধ খাওয়ানো যায়?
২ বছর বয়সের অধিক বাচ্চাদের কৃমির ঔষধ খাওয়ানো যায়। তবে, কৃমির ঔষধ খেতে হলে ৩ মাস অন্তর অন্তর খেতে হবে। নয়তো, ঠিকভাবে কৃমি নির্মূল হবেনা।
শেষ কথা
স্পেসিফিক ইনফোর আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে বাচ্চাদের কৃমির ঔষধ কোনটা ভালো, কৃমি কেন হয় তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আর এমন তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।