১০টি সাত দিনে চিকন হওয়ার উপায় জানুন ২০২৪

১০টি সাত দিনে চিকন হওয়ার উপায় জানুন ২০২৪

১০টি সাত দিনে চিকন হওয়ার উপায় জানুন ২০২৪

দ্রুত ওজন কমানোর জন্য বেশ কিছু কৌশল ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে দ্রুত ওজন কমানো সবসময় নিরাপদ বা টেকসই নয়, এবং ওজন কমানোর প্রোগ্রাম শুরু করার আগে একজন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।

ক্যালোরি গ্রহণ কম করুন: ওজন কমানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল আপনার পোড়ার চেয়ে কম ক্যালোরি খাওয়ার মাধ্যমে ক্যালোরির ঘাটতি তৈরি করা। ক্যালোরি কম, কিন্তু পুষ্টিগুণ বেশি এমন একটি খাদ্য খাওয়া ওজন কমানোর সময়ও আপনাকে পূর্ণ এবং সন্তুষ্ট বোধ করতে সাহায্য করতে পারে।

শারীরিক ক্রিয়াকলাপ বাড়ান: নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে আরও ক্যালোরি পোড়াতে এবং পেশীর ভর বাড়াতে সাহায্য করতে পারে, যা আপনার বিপাককে বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং দ্রুত ওজন কমাতে সহায়তা করতে পারে। প্রতিদিন কমপক্ষে 30 মিনিটের মাঝারি-তীব্র ব্যায়ামের লক্ষ্য রাখুন, যেমন দ্রুত হাঁটা বা সাইকেল চালানো।

ভুলভাল নিয়মে চিকন হতে গেলে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয়ে থাকে। তাই সঠিক নিয়মে ওজন কমিয়ে চিকন হওয়ার চেষ্টা করা উচিত। আজকে আমরা এমন ১০টি চিকন হওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করবো যা আপনাকে আপনার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে। চলুন জেনে নেই…

১০টি সাত দিনে চিকন হওয়ার উপায় জানুন ২০২৪

আরও পড়ুন — চুলকানি দূর করার ক্রিম নাম এবং দাম কত

Table of Contents

সহজে চিকন হওয়ার উপায় গুলো কি কি?

চিকন স্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে জেনে নিতে হবে আপনার মোটা হওয়ার কারণগুলো কি কি? সাধারণত আমাদের স্বাস্থ্য মোটা এবং চিকন হওয়া নির্ভর করে আমাদের খাদ্যাভ্যাস, লাইফস্টাইল এবং পারিপার্শ্বিক পরিবেশের উপর। মোটা হয়ে যাওয়ার অনেক ধরনের কারণ থাকতে পারে। যেমনঃ সঠিক খাদ্যাভ্যাস না মেনে চলা, পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের ঘাটতি, কোন রোগ অথবা ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি।

এসব সমস্যার কারণে দেখা যায় অনেক চেষ্টার পরও অনেকেই চিকন হতে পারেন না। অথবা একবার ওজন কমিয়ে চিকন হয়ে কিছুদিন পর আবার আগের ওজনেই ফিরে যাচ্ছেন। আপনি যদি চিকন হতে সঠিক এবং স্বাস্থ্যকর উপায়ে গুলো মেনে চলেন তবে পুনরায় আবার আগের ওজনের ফিরে যাওয়ার সুযোগ কম থাকবে। তাহলে চিকন হওয়ার জন্য আপনাকে যা যা মেনে চলতে হবেঃ

আরও পড়ুন — গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা করার উপায়

১০টি সাত দিনে চিকন হওয়ার উপায় জানুন ২০২৪

১. আপনার BMR জেনে নিন

চিকন হতে অবশ্যই আপনাকে আপনার BMR( Basal metabolism ratio) জেনে নিতে হবে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে বিএমআই আমাদের ওজন, উচ্চতা, দৈনিক কাজের হিসাব পরিমাপ করে বলে দেয় আমাদের শরীরের ক্যালরি চাহিদা কত। গুগলে বিএমআর ক্যালকুলেটর পেয়ে যাবেন যেখান থেকে BMR হিসাব করে নিতে পারবেন। চিকন হওয়ার জন্য আপনাকে আপনার দেহের চাহিদার তুলনায় ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে। এবং ধীরে ধীরে ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ এর চাইতেও কমিয়ে আনতে হবে। একবারে বেশি পরিমাণে ক্যালোরি কমিয়ে ফেলতে যাবেন না এতে আপনার ফ্যাটলস না হয়ে মাংসপেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

২. সঠিক সময়ে ব্রেকফাস্ট করুন

অনেকেই সকাল বেলার ব্রেকফাস্ট করা বাদ দিয়ে দেন চিকন হওয়ার আশায়। কিন্তু এটা যে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকারক তা হয়তো আপনি সাথে সাথে বুঝবেন না। এতে সাময়িক ভাবে আপনার শরীর থেকে কিছুটা ওজন ঝরলেও তা পুনরায় আবার ফিরে আসার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কারণ সকাল বেলার খাবারটা আমাদের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। আপনার মেটাবলিজম ঠিক থাকলে খাবার দ্রুত হজম হবে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করবে। তাই সকাল আটটা থেকে নটার মাঝে আপনার ব্রেকফাস্ট শেষ করুন।

আরও পড়ুন — এলার্জি ঔষধ এর নাম বাংলাদেশ

৩. ওয়েট লস ডায়েট প্ল্যান তৈরি করুন

চিকন হওয়ার জন্য অনেক ধরনের ওয়েট লস ডায়েট প্ল্যান রয়েছে। আপনার শরীরের গঠন অনুযায়ী কি ধরনের ডায়েট আপনি ফলো করতে পারেন তা অবশ্যই একজন ডায়েটিশিয়ান এর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে নিবেন। এছাড়া ঘরে বসেও আপনি নিজেও বের করে ফেলতে পারেন কোন ডায়েট প্ল্যানটি আপনার জন্য সঠিক হবে। আপনার বিএমআর অনুযায়ী ক্যালরি হিসাব করে নিয়ে আপনার ডায়েট প্ল্যান পছন্দ করে নিতে পারবেন। এখানে কিছু প্রচলিত ডায়েট প্ল্যানের তালিকা দিচ্ছিঃ

  • ·        কিটো ডায়েট
  • ·        লো-কার্ব
  • ·        ক্রাশ ডায়েট
  • ·        জিএম ডায়েট
  • ·        ইন্টারমিডিয়েট ফাস্টিং

বর্তমানে এই ডায়েট প্ল্যান গুলো চিকন হওয়ার জন্য খুব জনপ্রিয়।

১০টি সাত দিনে চিকন হওয়ার উপায় জানুন ২০২৪

৪. চিকন হতে ব্যায়াম করুন

বলা হয়ে থাকে চিকন এবং আকর্ষণীয় শারীরিক গঠন পেতে ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। ব্যায়ামের সময় আমাদের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং আমাদের শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকর ফ্যাট নির্গত হয়ে যায়। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ব্যায়াম করার ফলে কম সময়ে চিকন এবং আকর্ষনীয় শারীরিক গঠন তৈরি করা যায়। ব্যায়াম করার আদর্শ সময় হচ্ছে সকাল এবং বিকেলে। সারা দিনে অন্তত ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। চিকন হওয়ার জন্য কিছু কার্যকরী ব্যায়াম হচ্ছে হাটা, দৌড়ানো, জগিং, সাঁতার কাটা, সাইকেলিং, ওয়েট লিফ্টিং ইত্যাদি। এছাড়া ঘরে বসেই আপনি আরো কিছু ব্যায়াম করতে পারেন যেমনঃ

  • ·        যোগব্যায়াম
  • ·        কার্ডিও
  • ·        এ্যারোবিক্স
  • ·        রেজিসটেন্স
  • ·        জুম্বা

আরও পড়ুন — মেয়েদের ব্রণ দূর করার ঔষধের নাম

৫. খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেটের চেয়ে প্রোটিন বেশি রাখুন

কার্বোহাইড্রেট আমাদের ওজন বৃদ্ধি করে মোটা করে ফেলে। তাই যতটা সম্ভব খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম রাখুন এবং প্রোটিনের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি রাখুন। যেমন ভাত, আলু, রুটি এগুলোর পরিবর্তে মাছ, ডিম, মুরগির মাংস এসব খাবার গ্রহণ করুন। রেডমিট অর্থাৎ গরু এবং খাসির মাংস যতটা পারবেন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। গরু এবং খাসির মাংসের চেয়ে মুরগির মাংসে চর্বির পরিমাণ কম থাকে। প্রোটিনযুক্ত খাবার আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দিয়ে থাকে। অপরদিকে কার্বোহাইড্রেট আমাদের মাংসপেশি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। তাই চিকন হওয়ার হতে চাইলে কার্বোহাইড্রেট পরিহার করাই ভালো।

আরও পড়ুন — জিসান নামের অর্থ কি

৬. ফাস্টফুড এবং কোমল পানীয় পরিহার করুন

আপনার মোটা হওয়ার অন্যতম কারণ কিন্তু ফাস্টফুড এবং কোমলপানীয়। এসব খাবার খেতে ভালো লাগলেও এগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। আর চিকন হতে চাইলে এসব খাবার অবশ্যই পরিহার করতে হবে। ফাস্টফুড তৈরিতে ফ্যাট জাতীয় উপকরন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এবং কোমল পানীয়তে থাকে প্রচুর পরিমাণে চিনি এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড। এসব খাবার দীর্ঘদিন খেলে ওবিসিটি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং আরো অনেক রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

৭. পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন

আমি বলবো, পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা আপনার চিকন হওয়ার জন্য একটি জাদুকরি উপায়। দৈনিক ৮-১২ গ্লাস পানি পান করলে আপনার শরীর থেকে ক্ষতিকর ফ্যাট এবং রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়ে যায়। এতে আমাদের শরীর হাইড্রেট থাকে এবং চর্বি জমা না হয়ে দ্রবীভূত হয়ে যায়। পানি আমাদের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। প্রত্যেক বেলা খাবারের আগে এক গ্লাস পানি খেয়ে নিলে খাবারের চাহিদাও কমে আসে।

৮. রাতের খাবার ঘুমানোর দুই ঘন্টা আগে শেষ করুন

চিকন হওয়ার ক্ষেত্রে রাতের খাবারটা সঠিক সময়ে শেষ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ রাতের খাবার শেষ করার পরপরই আমরা ঘুমোতে চলে যাই। এর ফলে সেই খাবারের পুরোটাই আমাদের শরীরে ফ্যাট হিসেবে জমা হয়ে থাকে। তাই রাতে ঘুমানোর অন্তত ২ ঘণ্টা আগে খাবার খেয়ে নেওয়া উচিত। এতে ঘুমানোর আগে সেই খাবারের ক্যালরি আমরা কাজের মাধ্যমে খরচ করে ফেলতে পারি।

আরও পড়ুন — সুহাসিনী অর্থ কি

৯. পর্যাপ্ত ঘুম

চিকন হওয়ার জন্য সঠিক সময়ে মেনে ঘুমানো প্রয়োজন। ঘুমের সময় আমাদের শারীরিক ঘাটতিগুলো পূরণ হয়ে যায় এবং ঘুম থেকে আমরা সারাদিন কাজ করার শক্তি পেয়ে থাকি। দৈনিক সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। রাত দশটা থেকে এগারটার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করুন। দিনের বেলা না ঘুমানোই ভালো। বিশেষ করে দুপুরের খাবার শেষ করে ঘুমাতে যাবেন না, এতে খাবারটি আমাদের শরীরে ফ্যাট হিসেবে জমা থাকে।

১০টি সাত দিনে চিকন হওয়ার উপায় জানুন ২০২৪

১০. নিজেকে চিন্তামুক্ত রাখুন

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা চিকন হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তাই যতটা পারবেন নিজেকে চিন্তা মুক্ত রাখার চেষ্টা করবেন। বেশি মাত্রায় চিন্তার কারণে আমাদের পরিপাক ক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়ে খাদ্য হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলে খাবার গুলো শক্তিতে রূপান্তরিত না হয়ে আমাদের শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। চিকন হতে চাইলে এই ব্যপারগুলো অবশ্যই আপনাকে মাথায় রাখতে হবে।

১০টি সাত দিনে চিকন হওয়ার উপায় জানুন ২০২৪

পরিশেষ

মনে রাখবেন চিকন হওয়ার জন্য আপনাকে সময় নিয়ে এবং ধৈর্য ধরে চেষ্টা করে যেতে হবে। দ্রুত চিকন হওয়ার চেষ্টা না করে স্বাস্থ্যকর উপায়গুলো মেনে চলবেন। আপনি যেহেতু একদিনে মোটা হননি, তাই একদিনেই চিকন হওয়াটাও সম্ভব নয়।

এই ছিলো চিকন হওয়ার উপায় নিয়ে আজকের আর্টিকেল। আশা করি আজকের উপায়গুলো আপনাদের কাজে আসবে। তাই ধৈর্য ধরে চেষ্টা করুন এবং কমেন্টবক্সে আমাদের জানান আপনার প্রতিক্রিয়া।

আমি Specific Info ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা এবং অ্যাডমিন। প্রফেশনালি কন্টেন্ট রাইটিং করার পাশাপাশি এই ব্লগে পড়ালেখা, সাধারণ জ্ঞান বিষয়ক তথ্য নিয়ে লিখে থাকি।

Leave a Comment